হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন ও আইনজীবী আব্দুল হামিদ এর লোকজনের সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত, রাবার বুলেট নিক্ষেপ একজন আটক।
আকিকুর রহমান রুমন, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ–
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জের ধরে বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন এবং আইনজীবী আব্দুল কাদির মিয়ার লোকজনের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে শান্ত করেন। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন।এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে। এছাড়া সংঘর্ষে আহতদেরকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৭মে(রোববার)সকাল ১০টায় বানিয়াচং উপজেলার ১৫নং পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)অজয় চন্দ্র দেব এর সাথে মুঠোফোনে বার,বার যোগাযোগ করা হলেও তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে জানান,সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বিথঙ্গল পুলিশ ফাঁড়ি(ইনচার্জ)এর দায়িত্বে থাকা এসআই হুমায়ূন কবিরসহ ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রথমিক ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলেও জানান। অন্যদিকে আহতদের ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.মোমিন উদ্দিন চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আরও কয়েকজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও গুরুতর একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানাযায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়,কুমড়ি গ্রামের বাসিন্দা বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন এবং আইনজীবী আব্দুল হামিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। সম্প্রতি ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন মানব পাচার মামলায় জেল হাজতে যান। আর আদালতে তার বিপক্ষে আইনজীবী হিসেবে লড়েন অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ। এপর থেকে তাদের বিরোধ আরও প্রকট আকার ধারণ করে। এর জের ধরে ৬মে শনিবার সকাল ১০টার দিকে ভাইস চেয়ারম্যান এর ছোট্ট ভাই মুর্শীদ আমিন আইনজীবী আব্দুল হামিদ মিয়াকে শারিরীক লাঞ্ছিত করেন।
এই বিষয়টি আইনজীবী আব্দুল হামিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে এবং এক পর্যায়ে আইনজীবীর লোকজন ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন এর একজন মহিলার উপর হামলা চালিয়ে আহত করেন।
তারপর উভয় পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। অন্যদিকে এই বিষয়টি সামাজিক ভাবে সমাধান করার লক্ষ্য নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের সাথে আলাপ আলোচনা করে ৭মে(রোববার)সকাল ১০টায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার ব্যবস্হা করেন সাবেক(মেম্বার) মন্তাজ মিয়া ও হাফিজ মাস্টারসহ এলাকার গন্যমান্য লোকজন।
কিন্তু সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দেশীয় অস্ত্র সস্র সহকারে আইনজীবী আব্দুল হামিদ মিয়ার লোকজন ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন এর বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়।
তাদের এমন অবস্থান দেখে ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন এর লোকজনও দেশীয় অস্ত্র সস্র নিয়ে হাঁকডাক দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ © নলডাঙ্গা বার্তা