1. admin@naldangabatra.com : admin :
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে আতংকিত গ্রামবাসী।

নলডাঙ্গা বার্তা ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার একটি ইউনিয়নে ১মাসে ৩৩টি ঘর বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দিনি দিন চোরের এমন উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী। চোরের এহেন কর্মকান্ডের অপরাধ নিয়ত্রন করতে না পারায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। এক অনুসন্ধানে এমনই চুরির ভয়াবহতা সম্পর্কে জানাযায় এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সাথে আলাপকালে। বানিয়াচং উপজেলার ৮নং খাগাওড়া ইউনিয়নের সন্দলপুর গ্রামে এসব চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
১,০৩৯ বার পঠিত

চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে আতংকিত গ্রামবাসী।

 

আকিকুর রহমান রুমন, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

 

 

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার একটি ইউনিয়নে ১মাসে ৩৩টি ঘর বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দিনি দিন চোরের এমন উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী। চোরের এহেন কর্মকান্ডের অপরাধ নিয়ত্রন করতে না পারায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। এক অনুসন্ধানে এমনই চুরির ভয়াবহতা সম্পর্কে জানাযায় এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সাথে আলাপকালে। বানিয়াচং উপজেলার ৮নং খাগাওড়া ইউনিয়নের সন্দলপুর গ্রামে এসব চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

 

এই গ্রামের লোকজন জানান,এমন কোন রাত নেই যে কোথাও না কোথাও এই দু:সাহসিক চুরি সংঘটিত হচ্ছে গ্রামের বিভিন্ন ঘর-বাড়ীতে৷ গ্রামবাসীর তথ্য সূত্রে জানাযায়,গত ১ মাসে অন্তত ৩৩টা বাড়ি ঘরে এসব দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা সংঘটিত করেছে এলাকার চিহ্নিত চোরের দল।প্রতিনিয়ত এসব চুরির ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে গ্রাম তথা পুরো ইউনিয়নের এলাকাবাসীর মধ্যে। এসব চোরেরা বাড়ির দরজা-জানালা ভেঙে ও অতি সুকৌশলে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণালঙ্কার,টাকা- পয়সা,টিভি,দামী মোবাইল ফোন সেটসহ ঘরের মূল্যবান মালামাল নিয়ে যাচ্ছে চোরের দল। পাশাপাশি বিভিন্ন বাড়ি থেকে সৌর বিদ্যুৎ চালিত সোলার ব্যাটারী ও ফিশারী থেকে থেকে মাছ পর্যন্ত চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এই চোর চক্র। এছাড়াও এসব চোরের দলের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা গ্রামের অসহায় প্রতিবন্ধী থাকা বাড়ি ঘরের লোকজনও।

অন্যদিকে এতোসব ঘটনার পরেও বেশি সংখ্যক ভুক্তভোগীরা চোরদের হয়রানি ও প্রাণের ভয়ে থানায় কোনো জিডি বা অভিযোগ দায়ের করেননি। এতে করে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রামে চুরির ঘটনা গুলো৷ এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হক ও বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো:আব্দুল্লা মিয়া সাথে আলাপকালে তারা এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,তাদের এলাকার ওই গ্রামে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেক পরিবার বর্তমানে নি:স্ব হয়ে পড়ছে৷ এদিকে চোরের ভয় আবার এসব ঘটনায় থানায় ও আদালতে হযরানীর শিকার হবেন বলে সাধারণ মানুষ তেমন কোন অভিযোগ ও করছেননা।

আবার কেউ কেউ হবিগঞ্জ আদালতে ও থানায় অভিযোগ করলেও চিহ্নিত চোরেরা রয়েছে অধরা হয়ে-! এতে পুলিশ বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা বলেও অভিমত প্রকাশ করেন তাদের সাথে অনেকেই। যার ফলে একের পর এক ঘটে চলছে এসব চুরির ঘটনা৷ ওই গ্রামের বর্গাচাষী কৃষক এবাদুর রহমান জানান, তার বাড়ীতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ঘরের পেছনের দরজার টিন কেটে অজ্ঞাত চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে তার ৪ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী অসুস্থ শিশুটির চিকিৎসার জন্য রাখা ৩৫ হাজার টাকা,মোবাইল ফোন সহ দামী মালামাল নিয়ে যায়। একই রাতে তার পাশ্ববর্তী আরেক প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলামের ঘরটিতে চুরি সংঘটিত করে এই দল।

গ্রামের আরেক প্রতিবন্ধী রাফিয়া বেগম জানন,কিছুদিন পূর্বে তার বাড়ীতেও চোরের দল হানা দেয় এবং তার সৌরবিদ্যুত ব্যাটারি ও মোবাইল ফোন সেটটি নিয়ে যায়৷
অপরদিকে কৃষক কাজল মিয়া জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তার বসত ঘরের জানালার গ্রীল কেটে একদল চোর প্রবেশ করে। এবং তার ঘরে থাকা ধান বিক্রির ৮০ হাজার নগদ টাকা,৩ ভরি স্বর্ণালংকার সহ ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এঘটনায় তিনি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন৷ গ্রামের আরেক কৃষক ইব্রাহিম মিয়া জানান, একদল চোরের হুমকিতে তিনি হবিগঞ্জের নির্বাহী হাকিম আদালতে ১০৭/১১৪/(সি) ধারায় অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এমনটাই বলেন ফয়জুল মিয়া, তিনি জানান চোর কর্তৃক তাকে হয়রানীর শিকার হয়ে অবশেষে বানিয়াচং থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এসব ঘটনা নিয়ে গ্রামের মাসুম মিয়া নামের এক যুবক জানায়,তাদের গ্রামে চোরের এমনই উপদ্রব বেড়ে চলছে যে বলা বাহুল্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন তাদের হিসাব অনুযায়ী গত ১ মাসে তাদের ইউনিয়নের গ্রাম গুলোতে প্রায় ৩৩টি বাড়িতে চুরির ঘটনা সংঘটিত ঘটেছে। এমনকি তার নিজ বাড়ীতেও গত ২৬ আগষ্ট রাতে চুরি সংঘটিত হয়েছে এবং তার দামী একটি মোবাইল ফোন সেট ছিলো এটা পর্যন্ত নিয়ে যায়।
পরে থানায় গেলে পুলিশ থাকে পরামর্শ দেয় যে এই বিষয়টি তিনি যেন হারানো জিডি করেন। তারপর তিনি পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করেন যাহার নাম্বার:-১৪২৪ তারিখ ২৮/০৮/২৩ ইং৷ এদিকে সন্দলপুর গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান,তার বাড়ীতেও চোরেরা হানা দিয়ে দু:সাহসিক চুরি করে লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায় চোরের দল। এমনটাই জানা গ্রামের কৃষক,দিন মজুর ও খেটে খাওয়া লোকজনের মধ্যে যাদের বাড়ি ঘরে চুরির ঘটনা গুলো ঘটেছে।এর মধ্যে আহমদ মিয়া, সাফিক মিয়া,কদ্দুস মিয়া,রতন রায়, গোপাল রায়, বনরায়, সুশীল রায়,আনোয়ার মিয়া, মোস্তফা মিয়া, রেজাউর রহমান, আবু বক্কর, কাজল মিয়া,রাজু মিয়ার বাড়ী সহ এ পর্যন্ত ৩৩টি বাড়িতে এই দু:সাহসিক চুরি সংঘটিত হওয়ার বর্ননা পাওয়া যায়।

গ্রামের অনেকেই আবার বলেন, চোরের দলের মধ্যে অনেকেই চিহ্নিত রয়েছেন তারা কিন্তু এলাকার লোকজনের সামনে ঠিকই বীরদর্পে চলাফেরা করছে।কিন্তু সাধারণ মানুষ প্রাণের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কিছুই করতে পারছেননা। আবার অনেকেই আইনের আশ্রয় নিয়েও তেমন কোন আইনী সহযোগীতাও পাচ্ছেননা বলে অভিযোগ তাদের। তাই তারা হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারসহ বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসন ও দেশের কাজে নিয়োজিত গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তাগনদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এব্যাপারে বানিয়াচং থানার ওসির দায়িত্বে থাকা আবু হানিফ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চুরির বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং আমরা সাথে সাথে অভিযান চালিয়ে এই পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছি। অন্যান্যদেরকেও গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান৷ সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ সব সময় মাঠে কাজ করছে৷
তবে সচেতন মহলের দাবী যেভাবে চুরির ঘটনা ঘটে চলছে এতে আইনশৃংখলার আরো অবনতি ঘটবে যদি ওদের লাগাম টেনে ধরা না হয়।

Facebook Comments Box

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ ©  নলডাঙ্গা বার্তা

 
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park